Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৮ মার্চ ২০১৫

বাংলাদেশে গৃহ ঋণ

 

 

গৃহনির্মাণ অর্থসংস্থান  একক ব্যক্তি বা পরিবার কিংবা অনেক পরিবারের বসবাসের জন্য একতলা বা বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণের জন্য গৃহনির্মাণ অর্থসংস্থান প্রয়োজন হয়। পাকিস্তান আমলে মুখ্যত সরকারের গণপূর্ত বিভাগই কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য বাসভবন নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনা করত। সরকারের অন্যান্য কোনো কোনো বিভাগও তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য বাসভবন নির্মাণের স্বল্প উদ্যোগ নিত। তবে কোনো ব্যক্তিকে বা বেসরকারি আবাসন সমিতিকে ঋণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ছিল মাত্র দুটি, একটি ছিল হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (এইচবিএফসি) এবং অপরটি ছিল করাচি-ভিত্তিক একটি বেসরকারি অর্থঋণ প্রতিষ্ঠান। এইচবিএফসি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫২ সালের গৃহনির্মাণ আইনের আওতায় একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে এবং এর প্রধান কার্যালয় ছিল ঢাকায়। প্রতিষ্ঠানটি মাসিক কিস্তিতে পরিশোধের শর্তে দীর্ঘমেয়াদি (১৫ বছর মেয়াদি) ঋণ দিত। পূর্ব পাকিস্তানে এর দুটি আঞ্চলিক এবং ছয়টি উপ-আঞ্চলিক কার্যালয় ছিল এবং এসবের মাধ্যমে তা এখানকার ৭০টি শহরের মানুষদের গৃহনির্মাণ সুবিধা দিত। পূর্ব পাকিস্তানের শহরগুলিতে তখন কিছু সংখ্যক সংখ্যক গৃহনির্মাণ সমবায় সমিতি সক্রিয় ছিল।

 

 

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পূর্ব পাকিস্তানে এইচবিএফসির আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক শাখাগুলির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ৭ (১৯৭৩) অনুযায়ী সেগুলিকে পুনর্গঠন করে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (বিএইচবিএফসি) গঠন করা হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক, সরকারি ও বেসরকারি প্রায় সকল বড় বড় প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি এবং অনেক অপ্রাতিষ্ঠানিক উৎস (বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন) থেকে গৃহনির্মাণ অর্থসংস্থান হয়ে থাকে। গ্রাম এলাকায় গৃহনির্মাণ অর্থসংস্থানের প্রধান উৎস হচ্ছে আবাসন সমবায় সমিতি। গত শতাব্দীর শেষে ১৯৯৯ সালে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা থকে গৃহনির্মাণ খাতে প্রদত্ত ঋণের দুই-তৃতীয়াংশই দিয়েছে জাতীয়করণকৃত বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ। গৃহনির্মাণ খাতে দেওয়া ব্যাংকসমূহের মোট ঋণ তাদের মোট পরিসম্পদের মাত্র ৪%। ব্যাংকিং খাতের গৃহনির্মাণ ঋণের অধিকাংশই দেওয়া হয়েছে বেসরকারি/ব্যক্তিগত ঋণগ্রহীতাদের, বাকিটা দেওয়া হয়েছে আবাসন সমিতিসমূহকে। ব্যাংকিং খাত থেকে গৃহনির্মাণ সুবিধাপ্রাপ্ত তৃতীয় একটি পক্ষ হচ্ছে ঋণদাতা-ব্যাংকেই কর্মরত কর্মচারী; তারা এ ঋণ বিশেষ সুবিধাজনক শর্তে পেয়ে থাকে।

 

বাংলাদেশে গৃহনির্মাণ ও সংস্থাপন অধিদপ্তর, গণপূর্ত বিভাগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশনসমূহসহ বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠান গৃহনির্মাণ অর্থসংস্থান এবং আবাসন অবকাঠামো নির্মাণে নিয়োজিত। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালিত ‘গৃহায়ণ তহবিল’ প্রকল্প নিম্ন ও মাঝারি আয়ের লোকদের জন্য গৃহনির্মাণ অর্থসংস্থানের উদ্দেশ্যে  এনজিও এবং বেসরকারি গৃহনির্মাণ প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বল্পসুদে ঋণ তহবিল সরবরাহ করছে।